আমরা বীরের জাতি, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে খালি হাতে আমরা শুধুমাত্র জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছি।
দলীয় কার্যালয় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রংপুরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ফেল করায় তারা এসব করতে সাহস পেয়েছে এবং করেছে। ঘুরে দাঁড়ালেই আর এসব করতে পারত? আপনারা বসেছিলেন কেন? আপনাদের নেতারা বসেছিল কেন? পকেটে হাত দিয়ে যদি ঘরে থাকেন, তাহলে তারা ঘরে ঘরে ঢুকে মেরে ফেলবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুর আড়াইটার সময় রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার কষ্ট হয়, আপনাদের পার্টি অফিস যখন ভাংচুর করল, তখন আপনারা নাই। অথচ পার্টি অফিস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ভিডিওতে দেখা গেল মাত্র কয়েকজন এইরকম ঘটনা ঘটিয়েছে। আপনারে সেখানে অবস্থান নিয়ে সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীদের প্রতিহত করতে পারতেন। তাই আমাদের রংপুরের আওয়ামী লীগে দুর্বলতা রয়েছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে, আওয়ামী লীগকে ঘুরে দাঁড়াতে হব। কেননা আমরা বীরের জাতি, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে খালি হাতে আমরা শুধুমাত্র জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সাধারণ ছাত্রদের সামনে রেখে বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিরা দেশকে অকার্যকর করতে চেয়েছিল। তারা গণভবনে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল, সচিবালয় আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। ঢাকার অবস্থা খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। দেশব্যাপী নাশকতার সঙ্গে যারাই জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। কারো জড়িত থাকার যথাযথ প্রমাণ থাকলে তা পুলিশকে জানাতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে, থানা লুট করেছে, ভার্সিটির সম্পদ নষ্ট করেছে, ভিসিকে হত্যার চেষ্টা করেছে, সবাইকে চিহ্নিত করা হবে। যারা অর্থায়ন করেছে, তাদের চিহ্নিত করা হবে। বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। আমরা কাউকে ছাড় দেব না। যেই পর্যন্ত আমরা সবাইকে শনাক্ত করতে না পারব, সেই পর্যন্ত আমাদের পুলিশের অভিযান, র্যাবের অভিযান, বিজিবির অভিযান, আনসারের অভিযান চলবে। সেই সাথে পাশে সেনাবাহিনী থাকবে।
মতবিনিময় সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সংসদ সদস্য জাকির হোসেন, আসাদুজ্জামান বাবলুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মতবিনিময়ের আগে ১৬ জুলাই থেকে পরবর্তী রংপুরে যে সহিংসতা ঘটে তার একটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শনী করা হয়। সেটি পরিচালনা করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান।
এর আগে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোটা আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত তাজহাট থানা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবন, রংপুর মহানগর ডিবি কার্যালয়, নবাবগঞ্জ ফাঁড়ি, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন।