মেলে না চাকরি, ভেঙে যায় বিয়ে, যে গ্রামের নাম শুনলে

  • আপডেট: ১২:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 33

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের একটি গ্রামের নাম রাইগ্রাম হলেও এলাকাসহ সারা দেশে পরিচিতি পেয়েছে ‘হেরোইন পল্লী’ নামে। ফলে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের।

তাদেরই একজন এসহাক আলী (৫৫)। তিনি রিকশাভ্যান-ইজিবাইক মেরামত করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দাম্পত্য জীবনে চার ছেলে-মেয়ের জনক তিনি। ছোট মেয়ে মাসুদা আক্তারের বিয়ে দিতে পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে।

গেল ১৫ আগস্ট মেয়ের সম্পন্ন হলেও এর আগে বিয়ে ভেঙেছে বহুবার। তুলনামূলক কম হলেও একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে অপর সন্তানদের ক্ষেত্রেও।

তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের সঙ্গে অন্য গ্রামের কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না। ফলে আর সবার মতো আমাকেও এমন বিপাকে পড়তে হয়েছিল।

শত চেষ্টার পর সম্প্রতি মেয়েকে বিয়ে দিতে পেরেছেন বলে জানালেন এসহাক। বর হেলাল মিয়া গার্মেন্টে চাকরি করেন, বাড়ি জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়।

একই গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম মিয়া (৩৮)। বাবা হায়দার আলী। তিনি তার জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, তিনি পেশায় একজন গাড়িচালক। সম্প্রতি অরিন পরিবহনে চালকের চাকরির জন্য কোম্পানির কার্যালয়ে যান। এসময় কর্তৃপক্ষ তার লাইসেন্সসহ যাবতীয় বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু যখন বাড়ির ঠিকানা জানতে পারেন, ঠিক তখনই শুধু হয় বিপত্তি। তিনি গাড়ি চালানোর ফাঁকে মাদক পরিবহন করবেন সন্দেহে নিয়োগ বঞ্চিত করা হয়।

 

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওই গ্রামের চার চারমাথা মোড়ে বটতলায় আয়োজিত মাদকবিরোধী মতবিনিময় সভায় এসব কথা উঠে আসে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন, পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি মতিন মোহাম্মদ।

বক্তব্য রাখেন, পলাশবাড়ী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম মিলন, রাইগ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম, সোহান মিয়া, সাদ্দাম হোসেন। সভা সঞ্চালনা করেন মো. গোলজার রহমান।

শেষে গ্রামটি মাদকমুক্ত করতে কমিটি গঠনসহ নানামুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

Tag :

মেলে না চাকরি, ভেঙে যায় বিয়ে, যে গ্রামের নাম শুনলে

আপডেট: ১২:৪৮:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের একটি গ্রামের নাম রাইগ্রাম হলেও এলাকাসহ সারা দেশে পরিচিতি পেয়েছে ‘হেরোইন পল্লী’ নামে। ফলে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হতে হচ্ছে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের।

তাদেরই একজন এসহাক আলী (৫৫)। তিনি রিকশাভ্যান-ইজিবাইক মেরামত করে জীবিকা নির্বাহ করেন। দাম্পত্য জীবনে চার ছেলে-মেয়ের জনক তিনি। ছোট মেয়ে মাসুদা আক্তারের বিয়ে দিতে পড়তে হয়েছে চরম বিপাকে।

গেল ১৫ আগস্ট মেয়ের সম্পন্ন হলেও এর আগে বিয়ে ভেঙেছে বহুবার। তুলনামূলক কম হলেও একই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে অপর সন্তানদের ক্ষেত্রেও।

তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের সঙ্গে অন্য গ্রামের কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না। ফলে আর সবার মতো আমাকেও এমন বিপাকে পড়তে হয়েছিল।

শত চেষ্টার পর সম্প্রতি মেয়েকে বিয়ে দিতে পেরেছেন বলে জানালেন এসহাক। বর হেলাল মিয়া গার্মেন্টে চাকরি করেন, বাড়ি জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়।

একই গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম মিয়া (৩৮)। বাবা হায়দার আলী। তিনি তার জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, তিনি পেশায় একজন গাড়িচালক। সম্প্রতি অরিন পরিবহনে চালকের চাকরির জন্য কোম্পানির কার্যালয়ে যান। এসময় কর্তৃপক্ষ তার লাইসেন্সসহ যাবতীয় বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু যখন বাড়ির ঠিকানা জানতে পারেন, ঠিক তখনই শুধু হয় বিপত্তি। তিনি গাড়ি চালানোর ফাঁকে মাদক পরিবহন করবেন সন্দেহে নিয়োগ বঞ্চিত করা হয়।

 

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ওই গ্রামের চার চারমাথা মোড়ে বটতলায় আয়োজিত মাদকবিরোধী মতবিনিময় সভায় এসব কথা উঠে আসে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন, পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি মতিন মোহাম্মদ।

বক্তব্য রাখেন, পলাশবাড়ী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি তাজুল ইসলাম মিলন, রাইগ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম, সোহান মিয়া, সাদ্দাম হোসেন। সভা সঞ্চালনা করেন মো. গোলজার রহমান।

শেষে গ্রামটি মাদকমুক্ত করতে কমিটি গঠনসহ নানামুখী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।