১২:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৯ দফা দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

  • আপডেট: ০১:৪১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 34

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে যমুনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান যমুনা ডেনিমস লিমিটিডে কারখানার (উৎপাদন ফ্লোরে) কর্মরত ২২৫ জন স্টাফ (ডিস্ট্রিবিউটর, সুপারভাইজার, ইনচার্জ) ১৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে। তাদের সাথে শ্রমিকদের একটি অংশও সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

শনিবার সকাল আটটা থেকে তারা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে শ্রমিকেরা সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করলে বেলা পৌণে ১১ টা থেকে যান চলাচল শুরু হয়।

তাদের ১৯ দফা দাবিগুলি হলো চলতি মাসের বেতনের সাথে সকল স্টাফদের স্থগিত হওয়া বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের মোট বেতনের ১০% পরিশোধ করতে হবে, ২০২৩ সালের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী বাড়ানো বেতন (ডিসেম্বর থেকে আগষ্ট) প্রদান করতে হবে, সকল স্টাফদের এবং শ্রমিকদের বকেয়া ছুটির টাকা চলতি মাসের বেতনের সাথে পরিশোধ করতে হবে, শ্রমিকদের চেয়ে স্টাফদের বেতন বৈষম্য করা যাবে না, সুপারভাইজারদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৩০০০ টাকা, লাইন চিফের বেতন সর্বনিম্ন ৩৮০০০ টাকা এবং ইনচার্জদের বেতন সর্বনিম্ন ৫০০০০ টাকা করতে হবে, এসব দাবী সেপ্টেম্বর মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। স্টাফদের ছুটির দিনে কাজ করানো হলে ১ দিনের হাজিরা দিতে হবে। সকল শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ৯০০ টাকা, সন্ধ্যা ৭টার পর সকল শ্রমিক এবং কর্মচারীদের টিফিন বিল ৫০ টাকা এবং ১১ টার পর ডিউটি করলে নাইট বিল ১০০ টাকা দিতে হবে।

সপ্তম কর্মদিবসের মধ্যে স্টাফ এবং শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হবে, চাকরির বয়স ৬ মাস হলে বেসিক সমপরিমাণ ঈদ বোনাস দিতে হবে, সকল স্টাফ এবং শ্রমিকদের কর্ম দক্ষতা অনুযায়ী প্রমোশন দিতে হবে। প্রতি তিন মাস পর পর কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের মাধ্যমে গ্রেড পরিবর্তনের সিস্টেম আবার চালু করতে হবে। তিনদিন লেট করলে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাজিরা এবং হাজিরা বোনাস কর্তন করা যাবে না, পূর্ব নির্ধারীত নোটিশ ছাড়া শ্রমিক কর্মচারীদের জোরপূর্বক চাকুরিচ্যুত করা হলে শ্রম আইন অনুযায়ী ১২০ দিনের (৪ মাস) বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিট নগদ পরিশোধ করতে হবে। কোনো শ্রমিক, কর্মচারী অসুস্থ বা মৃত্যু হলে তাদের চিকিৎসার খরচসহ বাড়ীতে লাশ পাঠিয়ে দাফনের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে বহন করতে হবে, কর্মরত অবস্থায় অনইচ্ছাকৃত ভুল এবং মেশিনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে বেতন কর্তন করা যাবে না, প্রত্যেক ঈদে মোট ১২ দিন করে ছুটি দিতে হবে, কোন ধরনের বেতন বৈষম্য করা যাবে না, কাজ না থাকার অযুহাতে ছুটি দিলে ওই ছুটি অন্যান্য দিনের সাথে এডজাস্ট করা যাবে না। কোন অভিযোগ ছাড়া ছাঁটাইকৃত পুরনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনরায় নিয়োাগ দিতে হবে। আন্দোলনরত কোন শ্রমিক, কর্মচারিদের ছাঁটাই করা যাবে না। এসব দাবির বিষয়ে প্রশাসন বিভাগের মহা ব্যবস্থাপকের (জিএম) উপর কোন ধরনের চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।

যুমনা ডেনিমস লিমিটেডের কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার সেলিম রেজা বলেন, আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে ৮/১০ জনকে কারখানার সভা কক্ষে এসে তাদের দাবীগুলো নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা আমাদের প্রস্তাব না মেনে কারখানার প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছে। সকাল থেকেই তারা শ্রমিকদেরকে কাখানায় প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ সহকারী পুলিশ সুপার (কোনাবাড়ী জোন) জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকালে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কারখানায় প্রবেশ না করে প্রধান ফটকে ১৯ দফা দাবীতে বিক্ষোভ করেছে। একপর্যায়ে তারা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

১৯ দফা দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

আপডেট: ০১:৪১:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে যমুনা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান যমুনা ডেনিমস লিমিটিডে কারখানার (উৎপাদন ফ্লোরে) কর্মরত ২২৫ জন স্টাফ (ডিস্ট্রিবিউটর, সুপারভাইজার, ইনচার্জ) ১৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে। তাদের সাথে শ্রমিকদের একটি অংশও সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে।

শনিবার সকাল আটটা থেকে তারা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে শ্রমিকেরা সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করলে বেলা পৌণে ১১ টা থেকে যান চলাচল শুরু হয়।

তাদের ১৯ দফা দাবিগুলি হলো চলতি মাসের বেতনের সাথে সকল স্টাফদের স্থগিত হওয়া বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের মোট বেতনের ১০% পরিশোধ করতে হবে, ২০২৩ সালের প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী বাড়ানো বেতন (ডিসেম্বর থেকে আগষ্ট) প্রদান করতে হবে, সকল স্টাফদের এবং শ্রমিকদের বকেয়া ছুটির টাকা চলতি মাসের বেতনের সাথে পরিশোধ করতে হবে, শ্রমিকদের চেয়ে স্টাফদের বেতন বৈষম্য করা যাবে না, সুপারভাইজারদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৩০০০ টাকা, লাইন চিফের বেতন সর্বনিম্ন ৩৮০০০ টাকা এবং ইনচার্জদের বেতন সর্বনিম্ন ৫০০০০ টাকা করতে হবে, এসব দাবী সেপ্টেম্বর মাস থেকে কার্যকর করতে হবে। স্টাফদের ছুটির দিনে কাজ করানো হলে ১ দিনের হাজিরা দিতে হবে। সকল শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস ৯০০ টাকা, সন্ধ্যা ৭টার পর সকল শ্রমিক এবং কর্মচারীদের টিফিন বিল ৫০ টাকা এবং ১১ টার পর ডিউটি করলে নাইট বিল ১০০ টাকা দিতে হবে।

সপ্তম কর্মদিবসের মধ্যে স্টাফ এবং শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হবে, চাকরির বয়স ৬ মাস হলে বেসিক সমপরিমাণ ঈদ বোনাস দিতে হবে, সকল স্টাফ এবং শ্রমিকদের কর্ম দক্ষতা অনুযায়ী প্রমোশন দিতে হবে। প্রতি তিন মাস পর পর কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের মাধ্যমে গ্রেড পরিবর্তনের সিস্টেম আবার চালু করতে হবে। তিনদিন লেট করলে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাজিরা এবং হাজিরা বোনাস কর্তন করা যাবে না, পূর্ব নির্ধারীত নোটিশ ছাড়া শ্রমিক কর্মচারীদের জোরপূর্বক চাকুরিচ্যুত করা হলে শ্রম আইন অনুযায়ী ১২০ দিনের (৪ মাস) বেতনসহ সার্ভিস বেনিফিট নগদ পরিশোধ করতে হবে। কোনো শ্রমিক, কর্মচারী অসুস্থ বা মৃত্যু হলে তাদের চিকিৎসার খরচসহ বাড়ীতে লাশ পাঠিয়ে দাফনের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষ নিজ দায়িত্বে বহন করতে হবে, কর্মরত অবস্থায় অনইচ্ছাকৃত ভুল এবং মেশিনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হলে বেতন কর্তন করা যাবে না, প্রত্যেক ঈদে মোট ১২ দিন করে ছুটি দিতে হবে, কোন ধরনের বেতন বৈষম্য করা যাবে না, কাজ না থাকার অযুহাতে ছুটি দিলে ওই ছুটি অন্যান্য দিনের সাথে এডজাস্ট করা যাবে না। কোন অভিযোগ ছাড়া ছাঁটাইকৃত পুরনো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনরায় নিয়োাগ দিতে হবে। আন্দোলনরত কোন শ্রমিক, কর্মচারিদের ছাঁটাই করা যাবে না। এসব দাবির বিষয়ে প্রশাসন বিভাগের মহা ব্যবস্থাপকের (জিএম) উপর কোন ধরনের চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।

যুমনা ডেনিমস লিমিটেডের কমপ্লায়েন্স ম্যানেজার সেলিম রেজা বলেন, আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে ৮/১০ জনকে কারখানার সভা কক্ষে এসে তাদের দাবীগুলো নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা আমাদের প্রস্তাব না মেনে কারখানার প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছে। সকাল থেকেই তারা শ্রমিকদেরকে কাখানায় প্রবেশ করতে দেয়নি। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ সহকারী পুলিশ সুপার (কোনাবাড়ী জোন) জাহাঙ্গীর আলম জানান, সকালে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কারখানায় প্রবেশ না করে প্রধান ফটকে ১৯ দফা দাবীতে বিক্ষোভ করেছে। একপর্যায়ে তারা কোনাবাড়ী-কাশিমপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।