উত্তর চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ায় আজ মঙ্গলবার চ্যাঙ্গি-৬ অবতরণের পর মডিউলকে বিশেষ কাভারে ঢেকে দেন কর্মকর্তারা। ছবি : সংগৃহীত
চ্যাং’ই-৬ চন্দ্র অভিযান সম্পূর্ণ সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে চীনের মহাকাশ সংস্থা। দেশটির জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন এক বিবৃতিতে আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) এই দাবি জানিয়েছে। খবর এএফপির।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘চ্যাং’ই-৬ চাঁদে তার মিশন সম্পূর্ণ সফলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। মিশনের সব কাজ স্বাভাবিকভাবে শেষ হয়েছে।
এদিকে, এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের মহাকাশযান পৃথিবীতে নেমে এসেছে। আজ মঙ্গলবার উত্তর চীনের অভ্যন্তরীণ মঙ্গোলিয়ায় আজ মঙ্গলবার চ্যাঙ্গি-৬ এর মডিউল অবতরণ করে। পরে সেখানে কর্মকর্তারা মডিউলকে স্বাগত জানায়।
চাঁদের দূরবর্তী অংশ দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা বহনকারী চীনা অনুসন্ধান যান চ্যাং’ই-৬ আজ পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। স্থানীয় সময় বিকেল ২টায় দেশটির উত্তরের স্বশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়ার অঞ্চলের মরুভূমিতে মহাকাশযানটি অবতরণ করে এটি।
গত ৪ জুন অনুসন্ধান যানটি চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে ফিরতি যাত্রা শুরু করে। চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া ৫৩ দিনের এই মিশনকে ‘মানব চন্দ্র অনুসন্ধানের ইতিহাসে একটি অভূতপূর্ব কীর্তি’ বলে অভিহিত করেছে।
এটি পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরবর্তী এলাকা থেকে মাটি এবং পাথরের নমুনা বহন করে নিয়ে এসেছে। এই এলাকা কখনও পৃথিবী থেকে দেখা যায় না। এটি রুক্ষ, অন্ধকার অঞ্চল, প্রাচীন লাভা প্রবাহের কারণে এই পৃষ্ঠদেশ অমসৃণ। বিজ্ঞানীরা এর নমুনা নিয়ে গবেষণার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
এর অর্থ হলো, সেখানে সংগ্রহ করা উপাদানগুলো আমাদেরকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করতে পারবে—কীভাবে চাঁদ তৈরি হয়েছিল এবং কীভাবে এটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিবর্তিত হয়েছে।
চ্যাং’ই-৬ গত ৩ মে হাইনান দ্বীপ প্রদেশের একটি মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং প্রায় এক মাস পরে চাঁদের বিশাল দক্ষিণ মেরুর আইটকেন বেসিনে নেমে আসে।
এটি নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি ড্রিল এবং রোবোটিক হাত ব্যবহার করেছে, রুক্ষ পৃষ্ঠের কিছু ছবি তুলে নিয়ে এসেছে এবং ধূসর মাটিতে একটি চীনা পতাকা স্থাপন করে এসেছে।
চীনের ‘মহাকাশ স্বপ্ন’র পরিকল্পনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অধীনে উচ্চ গতি পেয়েছে। গত এক দশকে বেইজিং তার মহাকাশ কর্মসূচিতে বিপুল সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, ঐতিহ্যবাহী মহাকাশ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়াকে ধরার প্রয়াসে উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি একটি স্পেস স্টেশন তৈরি করেছে, মঙ্গল ও চাঁদে রোবোটিক রোভার অবতরণ করেছে এবং কক্ষপথে স্থাপিত নিজস্ব মহাকাশ স্টেশনে মহাকাশচারীদের পাঠানোর জন্য তৃতীয় দেশ হয়ে উঠেছে।
চীন ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে একটি ক্রু মিশন পাঠানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে চন্দ্রপৃষ্ঠে একটি ঘাঁটি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে।