সরকার মানসম্মত প্রাথমিকে শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট: ০৫:২৫:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪
  • 37

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।

এ উপলক্ষে তিনি দেশের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘শিশুবান্ধব শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর শিক্ষাখাতকে গুরুত্ব দিয়ে ১৯৭২ সালে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কুদরত-ই খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। তিনি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেন এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৪ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং ১ লাখ ৫ হাজার ৬১৬ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকদের পদ ২য় শ্রেণিতে এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল কয়েক ধাপ উন্নীত করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে এবং এ উপবৃত্তির টাকা তাদের মায়ের কাছে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে। স্কুল ফিডিং, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন, শিক্ষকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ প্রদান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করার পাশাপাশি অনেক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, তাঁরা ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে যাচ্ছেন। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে মোট ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭টি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৭ সাল হতে চাকমা, মারমা, গারো, ত্রিপুরা ও সাদারি এই ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পাঠ্যপুস্তকের সাথে টকিং বুক দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, তাঁদের সময়োপযোগী পদক্ষেপে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার মতো শিশুদের ভর্তির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়ার হার কমানো, বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বৃদ্ধি, শিক্ষাচক্র সমাপনের হার বৃদ্ধিসহ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং আমাদের নির্বাচনি ইশতেহার মানসম্মত ও জীবনমুখী শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হব এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব, ইনশা আল্লাহ।

Tag :

সরকার মানসম্মত প্রাথমিকে শিক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ০৫:২৫:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছে এবং মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।

এ উপলক্ষে তিনি দেশের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য- ‘শিশুবান্ধব শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর শিক্ষাখাতকে গুরুত্ব দিয়ে ১৯৭২ সালে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কুদরত-ই খুদাকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। তিনি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে জাতীয়করণ করে প্রাথমিক শিক্ষাকে সর্বজনীন অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করেন এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৪ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেছেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং ১ লাখ ৫ হাজার ৬১৬ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকদের পদ ২য় শ্রেণিতে এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতনস্কেল কয়েক ধাপ উন্নীত করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে এবং এ উপবৃত্তির টাকা তাদের মায়ের কাছে মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পৌঁছে যাচ্ছে। স্কুল ফিডিং, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন, শিক্ষকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ প্রদান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করার পাশাপাশি অনেক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, তাঁরা ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে যাচ্ছেন। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে মোট ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭টি বই বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৭ সাল হতে চাকমা, মারমা, গারো, ত্রিপুরা ও সাদারি এই ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় রচিত পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পাঠ্যপুস্তকের সাথে টকিং বুক দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, তাঁদের সময়োপযোগী পদক্ষেপে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার মতো শিশুদের ভর্তির হার বৃদ্ধি, ঝরে পড়ার হার কমানো, বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বৃদ্ধি, শিক্ষাচক্র সমাপনের হার বৃদ্ধিসহ মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং আমাদের নির্বাচনি ইশতেহার মানসম্মত ও জীবনমুখী শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হব এবং দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব, ইনশা আল্লাহ।