জাতিসঙ্ঘের এক মুখপাত্র শুক্রবার অবরুদ্ধ গাজার ‘অসহনীয়’ পরিস্থিতির নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, গাজার বাসিন্দারা বোমায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনে বা আবর্জনার বিশাল স্তূপের সামনে তাঁবু খাটিয়ে জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত জাতিসঙ্ঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ’র কর্মকর্তা লুইস ওয়াটেরিজ গাজা ভূখণ্ডে বিরাজমান জীবনযাপনের জন্য ‘অত্যন্ত বৈরী’ পরিবেশের বর্ণনা দেন।
মধ্য গাজা থেকে ভিডিও-লিঙ্কের মাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে তিনি সংবাদদাতাদের বলেন, ‘পরিস্থিতি প্রকৃত অর্থে অসহনীয়।’
চার সপ্তাহ এই অঞ্চলের বাইরে অবস্থান করছিলেন ওয়াটেরিজ। বুধবার তিনি গাজায় ফিরে আসেন এবং জানান, এই অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতির ‘উল্লেখযোগ্য অবনতি’ হয়েছে।
‘আজকের দিনটি নিশ্চিতভাবেই (গাজার ইতিহাসে) সবচেয়ে খারাপ দিন। এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই যে আগামীকাল আরো একটি ‘সবচেয়ে খারাপ দিন’ হবে : বলেন তিনি।
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে প্রায় নয় মাসের যুদ্ধে, গাজা ভূখণ্ড ‘ধ্বংস’ হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন ওয়াটেরিজ।
তিনি জানান, মধ্য গাজার খান ইউনিসে ফিরে তিনি ‘স্তম্ভিত’ হয়ে পড়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ভবনগুলোর কিছুটা অংশ যদি থেকেও থাকে, তা কঙ্কালের রূপ ধারণ করেছে। প্রায় সবকিছুই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘তারপরও মানুষ সেখানে জীবনযাপন করছে।’
‘সেখানে কোনো পানি নেই। নেই কোনো পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বা খাবার’, বলেন তিনি। ‘আর এখন মানুষশূন্য খোলসের মতো ভবনগুলোতে, বোমার আঘাতে উড়ে যাওয়া দেয়ালের ফাঁকগুলোকে আচ্ছাদনে ঢেকে, আবার জীবনযাপন শুরু করেছে’ যোগ করেন তিনি।
শৌচাগার না থাকায় ‘মানুষ যেখানে পারছে সেখানে মল-মূত্রত্যাগ করছে, আরো বলেন ওয়াটেরিজ।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের হামলার মাধ্যমে গাজার যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।
হামাস-পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক ব্যক্তি।