বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে : নিহত ১

  • আপডেট: ০৪:১২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪
  • 38

গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ১৫/১৭ জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশের তিনটি পিকআপভ্যানসহ মাওনা হাইওয়ে থানার দু’টি পুলিশ বক্সে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

এদিকে একইদিন কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও গাজীপুর সদরের শিমুলতলী এলাকায়ও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

নিহত জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লেপতোষকের ব্যবসা করতেন। তার বাড়ি বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি ৫/৭ বছর আগে শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় বিয়ে করেন বলে তার প্রতিবেশী কাজল জানিয়েছেন।

জানা গেছে, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল হতে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা ও পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা মাওনা উড়াল সেতু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ফিরে এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা পিছু হটে। এতে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং উড়াল সেতুর নিচে হাইওয়ে পুলিশের দু’টি বক্সে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ বাধা দিলে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে পুলিশের কয়েক সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়। একপর্যায়ে দুপুরে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

ঘটনার সময় মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লেপতোষকের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম নিহত হন। তিনি স্থানীয় কেওয়া বাজার থেকে তুলা আনতে গিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হন বলে স্থানীয়রা জানান। নিহতের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি ৫/৭ বছর আগে শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় বিয়ে করেন বলে তার প্রতিবেশী কাজল জানিয়েছেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, আমরা নিরস্ত্র হাতে শান্তিপূর্ণভাবে শ্রীপুর সড়কের ভাই ভাই সিটিতে অবস্থান করছিলাম। আন্দোলকারীরা হঠাৎ করে নিরস্ত্র পুলিশের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা ভাই ভাই সিটির নিচে রাখা পুলিশের তিনটি গাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করে এবং আগুণ ধরিয়ে দেয়। পরে তারা উড়াল সেতুর নিচে হাইওয়ে পুলিশের দুটি বক্সেও আগুণ দেয়।

এদিকে একইদিন কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও গাজীপুর সদরের শিমুলতলী এলাকায়ও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এ সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেও ধাওয়ায় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

Tag :

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে : নিহত ১

আপডেট: ০৪:১২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪

গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ১৫/১৭ জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশের তিনটি পিকআপভ্যানসহ মাওনা হাইওয়ে থানার দু’টি পুলিশ বক্সে ব্যাপক ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।

এদিকে একইদিন কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও গাজীপুর সদরের শিমুলতলী এলাকায়ও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা।

নিহত জাহাঙ্গীর আলম (৪৫) মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লেপতোষকের ব্যবসা করতেন। তার বাড়ি বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি ৫/৭ বছর আগে শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় বিয়ে করেন বলে তার প্রতিবেশী কাজল জানিয়েছেন।

জানা গেছে, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল হতে স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণের শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তা ও পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা মাওনা উড়াল সেতু এলাকা থেকে সরে গেলে সেখানে অবস্থান নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ফিরে এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা পিছু হটে। এতে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা পুলিশের তিনটি গাড়ি ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং উড়াল সেতুর নিচে হাইওয়ে পুলিশের দু’টি বক্সে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ ঘটনায় শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ বাধা দিলে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে পুলিশের কয়েক সদস্যসহ কয়েকজন আহত হয়। একপর্যায়ে দুপুরে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।

ঘটনার সময় মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লেপতোষকের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম নিহত হন। তিনি স্থানীয় কেওয়া বাজার থেকে তুলা আনতে গিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে নিহত হন বলে স্থানীয়রা জানান। নিহতের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। তিনি ৫/৭ বছর আগে শ্রীপুরের মাওনা এলাকায় বিয়ে করেন বলে তার প্রতিবেশী কাজল জানিয়েছেন।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান জানান, আমরা নিরস্ত্র হাতে শান্তিপূর্ণভাবে শ্রীপুর সড়কের ভাই ভাই সিটিতে অবস্থান করছিলাম। আন্দোলকারীরা হঠাৎ করে নিরস্ত্র পুলিশের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে তারা ভাই ভাই সিটির নিচে রাখা পুলিশের তিনটি গাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করে এবং আগুণ ধরিয়ে দেয়। পরে তারা উড়াল সেতুর নিচে হাইওয়ে পুলিশের দুটি বক্সেও আগুণ দেয়।

এদিকে একইদিন কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ও গাজীপুর সদরের শিমুলতলী এলাকায়ও একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এ সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেও ধাওয়ায় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।