বিজেপি নেতা শুভেন্দুর অভিযোগ

মমতা তুষ্টির রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া নির্মাণে জমি দিচ্ছেন না

  • আপডেট: ১০:৫৪:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 56

তুষ্টির রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া নির্মাণে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জমি দিচ্ছেন না বলে অভিযোগে করেছেন রাজ্যের বিরোধীদল বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে বাংলাদেশিদের নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মন্তব্যে সুর মিলিয়ে তিনিও দাবি করেছেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ডের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়।

ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করবেন বলে কয়েকদিন আগে হুমকি দিয়েছিলেন অমিত শাহ। পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অমিত শাহর এই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানায়।

বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে ঝাড়খণ্ড রাজ্য সফর করছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে এসব মন্তব্য করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলায় বিজেপির ‘‘পরিবর্তন যাত্রায়’’ অংশ নেন শুভেন্দু অধিকারী। পরে বোকারো এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিজেপির এই নেতা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ৭২টি জায়গা রয়েছে, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিএসএফকে বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর বেড়া নির্মাণ সম্পূর্ণ করার জন্য জমি দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জমি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু তিনি কেবল ভোট ব্যাংক আর তুষ্টির রাজনীতি বিবেচনায় জমি বরাদ্দ দেননি।

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ‘‘বেড়াহীন এলাকা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করছে এবং রাজ্যে তাদের জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে’’ বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে হলে ‘‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’’ প্রয়োজন। অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ডের হিন্দু সমাজ ও উপজাতিদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত কয়েক বছর বছর ধরে বিজেপি নেতারা ‘‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’’ শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বিজেপি নেতারা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা একই দলকে বোঝাতে এই শব্দের ব্যবহার করেন।

ঝাড়খণ্ডের জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতায় যদি ইনডিয়া জোট ফিরে আসে, তাহলে জাতীয়তাবাদ, হিন্দু সংস্কৃতি, উপজাতি এবং রাজ্যের আদি বাসিন্দাদের জন্য তা হুমকি হবে। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ঝাড়খণ্ডের মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজেপির এই নেতা বলেন, ঝাড়খণ্ডে প্রায় ৯০ লাখ বাংলাভাষী মানুষ রয়েছেন এবং তাদের ৯০ শতাংশই বিজেপির পদ্ম প্রতীকে ভোট দেবেন। চলতি বছরের শেষের দিকে বিধানসভা নির্বাচনের কথা রয়েছে। এই নির্বাচনে নজর রেখে ঝাড়খণ্ডের বিরোধীদল বিজেপি জনগণের কাছে পৌঁছানো এবং রাজ্যে জেএমএম-নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ করতে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ছয়টি ‘‘পরিবর্তন যাত্রা’’ করার ঘোষণা দিয়েছে।

ঝাড়খণ্ডের ২৪টি জেলার ৮১টি বিধানসভা আসনে এসব পদযাত্রা করবে বিজেপি। আগামী ২ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে বিজেপির এই পদযাত্রা। এতে বিজেপির জাতীয় ও রাজ্য-পর্যায়ের প্রায় ৫০ জন শীর্ষ নেতা অংশ নেবেন। তাদের মধ্যে কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও থাকবেন বলে বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

Tag :

বিজেপি নেতা শুভেন্দুর অভিযোগ

মমতা তুষ্টির রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া নির্মাণে জমি দিচ্ছেন না

আপডেট: ১০:৫৪:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তুষ্টির রাজনীতির কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া নির্মাণে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় জমি দিচ্ছেন না বলে অভিযোগে করেছেন রাজ্যের বিরোধীদল বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে বাংলাদেশিদের নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মন্তব্যে সুর মিলিয়ে তিনিও দাবি করেছেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ডের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়।

ঝাড়খণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করবেন বলে কয়েকদিন আগে হুমকি দিয়েছিলেন অমিত শাহ। পরে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অমিত শাহর এই মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানায়।

বিজেপির নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে ঝাড়খণ্ড রাজ্য সফর করছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে এসব মন্তব্য করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলায় বিজেপির ‘‘পরিবর্তন যাত্রায়’’ অংশ নেন শুভেন্দু অধিকারী। পরে বোকারো এলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিজেপির এই নেতা বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ৭২টি জায়গা রয়েছে, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিএসএফকে বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর বেড়া নির্মাণ সম্পূর্ণ করার জন্য জমি দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জমি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু তিনি কেবল ভোট ব্যাংক আর তুষ্টির রাজনীতি বিবেচনায় জমি বরাদ্দ দেননি।

বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ‘‘বেড়াহীন এলাকা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করছে এবং রাজ্যে তাদের জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে’’ বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে হলে ‘‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’’ প্রয়োজন। অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ডের হিন্দু সমাজ ও উপজাতিদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত কয়েক বছর বছর ধরে বিজেপি নেতারা ‘‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার’’ শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বিজেপি নেতারা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা একই দলকে বোঝাতে এই শব্দের ব্যবহার করেন।

ঝাড়খণ্ডের জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতায় যদি ইনডিয়া জোট ফিরে আসে, তাহলে জাতীয়তাবাদ, হিন্দু সংস্কৃতি, উপজাতি এবং রাজ্যের আদি বাসিন্দাদের জন্য তা হুমকি হবে। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ঝাড়খণ্ডের মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজেপির এই নেতা বলেন, ঝাড়খণ্ডে প্রায় ৯০ লাখ বাংলাভাষী মানুষ রয়েছেন এবং তাদের ৯০ শতাংশই বিজেপির পদ্ম প্রতীকে ভোট দেবেন। চলতি বছরের শেষের দিকে বিধানসভা নির্বাচনের কথা রয়েছে। এই নির্বাচনে নজর রেখে ঝাড়খণ্ডের বিরোধীদল বিজেপি জনগণের কাছে পৌঁছানো এবং রাজ্যে জেএমএম-নেতৃত্বাধীন সরকারের ব্যর্থতা প্রকাশ করতে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ছয়টি ‘‘পরিবর্তন যাত্রা’’ করার ঘোষণা দিয়েছে।

ঝাড়খণ্ডের ২৪টি জেলার ৮১টি বিধানসভা আসনে এসব পদযাত্রা করবে বিজেপি। আগামী ২ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা রয়েছে বিজেপির এই পদযাত্রা। এতে বিজেপির জাতীয় ও রাজ্য-পর্যায়ের প্রায় ৫০ জন শীর্ষ নেতা অংশ নেবেন। তাদের মধ্যে কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও থাকবেন বলে বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।