ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ

  • আপডেট: ০৬:০০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
  • 20

সংগৃহীত ছবি

লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরাইল। এসব হামলায় লেবানন প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন। দেশটির জনগণের ওপর চলমান এ বর্বর হামলার প্রতিশোধ নিতে তেল আবিবের উপকণ্ঠে ইসরাইলের গ্লিলট সামরিক ঘাঁটি এবং মোসাদ সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।

হিজবুল্লাহ জানায়, ও নাসরাল্লাহ! আমরা তোমার সেবায় আছি স্লোগান দিয়ে মঙ্গলবার ইসরাইলি গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০ এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত গ্লিলট ঘাঁটিতে একাধিক ‘ফাদি-৪’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

ফিলিস্তিন বিষয়ক সংবাদমাধ্যম প্যালেস্টাইন ক্রনিকল ও তেহরানভিত্তিক প্রেসটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন প্রথমবারের মতো ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাতে ফাদি-৪ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে হিজবুল্লাহ। এটি ছিলো ইসরাইলে চালানো হিজবুল্লাহর সবচেয়ে বড় হামলা।

ইসরাইলি চ্যানেল ১২ বলছে, লেবানন থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টি প্রজেক্টাইল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। হিজবুল্লাহর হামলার কারণে লক্ষাধিক ইসরাইলি নাগরিক বোমা শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত আলাদা এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, শ্তুলা, মেতুল্লা, আভিভিম এবং রোশ পিনা বসতিতে ইসরাইলি সেনাদের জমায়েত লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও দখলদার সেনাদের লক্ষ্য করে ডোভিভ ব্যারাক এবং রোশ পিনা বসতিতেও আঘাত করা হয়েছে। তবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।

ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, লেবানন থেকে তেল আবিব লক্ষ্য করে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেশ কয়েকজন বসতি স্থাপনকারী আহত হয়েছেন।

এদিকে তেল আবিবের উত্তরে কফার সাবার কাছে একটি রকেট পড়লে আগুন ধরে যায়। ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কেএএন জানিয়েছে, এদিন লেবানন থেকে বৃহত্তর তেল আবিব এলাকার দিকে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়াও মোট ১০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লেবানন থেকে তেল আবিবের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো। কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করা হয়।

এদিকে মঙ্গলবার ভোরে ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে একযোগে সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের লক্ষ্যবস্তু ছিলো সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম।

লেবাননের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইসরাইলি আক্রমণে এক হাজারেরও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

লেবাননের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের শুরু থেকে লেবাননে ইসরাইলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৭৪৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৯ হাজার নাগরিক।

গেলো বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ।

চলমান এ গণহত্যার প্রতিবাদে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ। এর জেরেই লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল।

Tag :

ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ

আপডেট: ০৬:০০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসী হামলা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরাইল। এসব হামলায় লেবানন প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন। দেশটির জনগণের ওপর চলমান এ বর্বর হামলার প্রতিশোধ নিতে তেল আবিবের উপকণ্ঠে ইসরাইলের গ্লিলট সামরিক ঘাঁটি এবং মোসাদ সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।

হিজবুল্লাহ জানায়, ও নাসরাল্লাহ! আমরা তোমার সেবায় আছি স্লোগান দিয়ে মঙ্গলবার ইসরাইলি গোয়েন্দা ইউনিট ৮২০০ এবং গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের তেল আবিবের উপকণ্ঠে অবস্থিত গ্লিলট ঘাঁটিতে একাধিক ‘ফাদি-৪’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।

ফিলিস্তিন বিষয়ক সংবাদমাধ্যম প্যালেস্টাইন ক্রনিকল ও তেহরানভিত্তিক প্রেসটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এদিন প্রথমবারের মতো ইসরাইলি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাতে ফাদি-৪ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে হিজবুল্লাহ। এটি ছিলো ইসরাইলে চালানো হিজবুল্লাহর সবচেয়ে বড় হামলা।

ইসরাইলি চ্যানেল ১২ বলছে, লেবানন থেকে এখন পর্যন্ত ৫০টি প্রজেক্টাইল উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। হিজবুল্লাহর হামলার কারণে লক্ষাধিক ইসরাইলি নাগরিক বোমা শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত আলাদা এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ বলেছে, শ্তুলা, মেতুল্লা, আভিভিম এবং রোশ পিনা বসতিতে ইসরাইলি সেনাদের জমায়েত লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও দখলদার সেনাদের লক্ষ্য করে ডোভিভ ব্যারাক এবং রোশ পিনা বসতিতেও আঘাত করা হয়েছে। তবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।

ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, লেবানন থেকে তেল আবিব লক্ষ্য করে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেশ কয়েকজন বসতি স্থাপনকারী আহত হয়েছেন।

এদিকে তেল আবিবের উত্তরে কফার সাবার কাছে একটি রকেট পড়লে আগুন ধরে যায়। ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কেএএন জানিয়েছে, এদিন লেবানন থেকে বৃহত্তর তেল আবিব এলাকার দিকে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এছাড়াও মোট ১০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লেবানন থেকে তেল আবিবের দিকে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো। কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আকাশেই ধ্বংস করা হয়।

এদিকে মঙ্গলবার ভোরে ইসরাইলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননে একযোগে সামরিক অভিযান শুরু করে। এই অভিযানের লক্ষ্যবস্তু ছিলো সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম।

লেবাননের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ইসরাইলি আক্রমণে এক হাজারেরও বেশি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।

লেবাননের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের শুরু থেকে লেবাননে ইসরাইলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত এক হাজার ৭৪৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ৯ হাজার নাগরিক।

গেলো বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। এ আগ্রাসনে ৪১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন এক লাখের বেশি মানুষ।

চলমান এ গণহত্যার প্রতিবাদে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইরান সমর্থিত হিজবুল্লাহ। এর জেরেই লেবাননের বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আসছে ইসরাইল।