গণভবন থেকে লুট হওয়া অস্ত্র সংগ্রহ করেছে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসীরা

  • আপডেট: ০৪:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪
  • 12

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ওই দিন গণভবন, সংসদ ভবনসহ চারটি স্থাপনায় তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তায় থাকা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) সব অস্ত্র-সরঞ্জাম ভল্ট থেকে লুট হয়ে যায়। তার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশ ব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি ড্রোন গান, অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস। ওই সময় এসএসএফের মোট ৩২টি অস্ত্র লুট হয়। এসএসএফের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

এসব বিষয়ে খোঁজ রাখেন এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গণভবন থেকে এসএসএফের অস্ত্রগুলো লুট করে সন্ত্রাসী ও সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ অস্ত্রের মূল্য বুঝতে না পেরে দু-তিন হাজার টাকায়ও বিক্রি করে দিয়েছে। আর এসব অস্ত্র সংগ্রহ করেছে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসীরা।

এই কর্মকর্তার কথার সত্যতা মিলেছে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা আজিম উদ্দিনের কথায়। তিনি জানান, ৫ আগস্ট জেনেভা ক্যাম্পের অনেক লোক গণভবনে গিয়েছিল। তিনিও গিয়েছিলেন। সেখানে কাউকে কাউকে তিনি অস্ত্র লুট করতে দেখেছেন। পরে ক্যাম্পে ফিরেও তিনি গণভবন ও থানা থেকে লুট করা অস্ত্র লোকজনের কাছে দেখতে পেয়েছেন।

ওই দিন বিকেলেই লুট করা অস্ত্র উঁচিয়ে জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় মিছিল করা হয়েছে। পরে সেসব অস্ত্রের কয়েকটি বানিয়া সোহেল এবং তাঁর বাহিনী দখলে নেয়।

র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোয়াজ্জেম হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আমরা অনেক অস্ত্র উদ্ধার করেছি। যারা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেছিল সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী বানিয়া সোহেলকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সেও অস্ত্র লুটের কথা স্বীকার করেছে। র‌্যাব তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানও চালিয়েছে। তবে সে বিভ্রান্ত করছে আমাদের। আশা করি, এসব অস্ত্র উদ্ধার করতে পারব।

এসএসএফের অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ‘যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে সেগুলো উদ্ধার করতে না পারলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো নাজুক হবে। উদ্ধার না হওয়া অস্ত্রগুলো অপরাধীসহ বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের হাতে চলে যেতে পারে। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।

 

 

 

 

 

 

 

সুত্র কালের কণ্ঠ
Tag :

গণভবন থেকে লুট হওয়া অস্ত্র সংগ্রহ করেছে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসীরা

আপডেট: ০৪:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর ওই দিন গণভবন, সংসদ ভবনসহ চারটি স্থাপনায় তাঁর এবং তাঁর পরিবারের নিরাপত্তায় থাকা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) সব অস্ত্র-সরঞ্জাম ভল্ট থেকে লুট হয়ে যায়। তার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশ ব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি ড্রোন গান, অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস। ওই সময় এসএসএফের মোট ৩২টি অস্ত্র লুট হয়। এসএসএফের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত সেপ্টেম্বরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।

এসব বিষয়ে খোঁজ রাখেন এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গণভবন থেকে এসএসএফের অস্ত্রগুলো লুট করে সন্ত্রাসী ও সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ অস্ত্রের মূল্য বুঝতে না পেরে দু-তিন হাজার টাকায়ও বিক্রি করে দিয়েছে। আর এসব অস্ত্র সংগ্রহ করেছে কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসীরা।

এই কর্মকর্তার কথার সত্যতা মিলেছে জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা আজিম উদ্দিনের কথায়। তিনি জানান, ৫ আগস্ট জেনেভা ক্যাম্পের অনেক লোক গণভবনে গিয়েছিল। তিনিও গিয়েছিলেন। সেখানে কাউকে কাউকে তিনি অস্ত্র লুট করতে দেখেছেন। পরে ক্যাম্পে ফিরেও তিনি গণভবন ও থানা থেকে লুট করা অস্ত্র লোকজনের কাছে দেখতে পেয়েছেন।

ওই দিন বিকেলেই লুট করা অস্ত্র উঁচিয়ে জেনেভা ক্যাম্প এলাকায় মিছিল করা হয়েছে। পরে সেসব অস্ত্রের কয়েকটি বানিয়া সোহেল এবং তাঁর বাহিনী দখলে নেয়।

র‌্যাব-২-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোয়াজ্জেম হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে আমরা অনেক অস্ত্র উদ্ধার করেছি। যারা প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেছিল সেগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী বানিয়া সোহেলকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সেও অস্ত্র লুটের কথা স্বীকার করেছে। র‌্যাব তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানও চালিয়েছে। তবে সে বিভ্রান্ত করছে আমাদের। আশা করি, এসব অস্ত্র উদ্ধার করতে পারব।

এসএসএফের অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, ‘যেসব অস্ত্র লুট হয়েছে সেগুলো উদ্ধার করতে না পারলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো নাজুক হবে। উদ্ধার না হওয়া অস্ত্রগুলো অপরাধীসহ বিভিন্ন বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্যদের হাতে চলে যেতে পারে। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।

 

 

 

 

 

 

 

সুত্র কালের কণ্ঠ