ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে সবখানেই জমে উঠেছে গবাদিপশুর হাট। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে মানুষের আর্থিক সামর্থ্য কমায় বাজেট কমিয়ে মাঝারি আকারের দেশি গরুই রয়েছে পছন্দের শীর্ষে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) ফেনীর কয়েকটি হাট ঘুরে গবাদিপশুর বিকিকিনির এমন বাজার পরিস্থিতি দেখা যায়।
সোনাগাজীর বখতার মুন্সী হাটে গরু নিয়ে এসেছেন কৃষক কবির আহম্মেদ। তিনি জানান, বেশি দামে নয়, ন্যায্য দাম পেলেই পালিত গরুটি বিক্রি করবেন।
সীমান্ত পেরিয়ে আসা কিংবা ফিড খেয়ে মোটাতাজা নয়, কৃষকের গোয়াল ঘরে লালন-পালন হওয়া এমন দেশিয় মাঝারি আকারের গরুগুলো হাটগুলোয় পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। এসব গরুগুলো ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশিয় গরু ছাড়াও বাজারে ভারতীয়, মিয়ানমার, নেপালি ও ভুটানের গরু লক্ষ্য করা গেছে। এসব গরু আকারে বড় হওয়ার কারণে দামেও বেশি। ফয়সাল আহমেদ নামের এক ক্রেতা জানান, এবার মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্য কম। সে কারণে মাঝারি জাতের গরু পছন্দ। এসব গরুর মাংস খেতেও মজা।
প্রান্তিকের সাধারণ কৃষক ও খামারিরা বলছেন, সব ধরনের পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় লালন-পালনে খরচ বেড়েছে। এখন হাটের পরিস্থিতি ভালো। শেষের দিকে যদি সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ করে তাহলে দাম কমে যাবে। এজন্য সীমান্তে নজরদারি দাবি করেছেন তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গবাদিপশুর প্রবেশ, চামড়া পাচার ও পশু চুরি ঠেকাতে সজাগ রয়েছে তারা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়ে তৎপর রয়েছে।
ফেনী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য প্রায় ৯০ হাজার ২৫০টি পশু বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগতভাবে পালন করেছেন খামারি ও গৃহস্থরা। এরমধ্যে ৩২ হাজার পাঁচটি ষাঁড় ও ২৮ হাজার ৩৫টি বলদ, আট হাজার ৭৬৪টি গাভী, পাঁচ হাজার ২২৮টি মহিষ, ১৪ হাজার ৫৯৫টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে এক হাজার ১২৩টি।
এই পরিমাণ পশুগুলো দিয়ে চলতি বছর জেলার কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো সম্ভব বলে জানান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
চলতি বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফেনীতে ছোট-বড়, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলে ১১৯টি হাটে গবাদিপশু বিকিকিনি চলছে। চলতি মৌসুমে এ বাজার ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।