১০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খরচ কম, ফলন বেশি, বাড়ছে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ

  • আপডেট: ০৯:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪
  • 35

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কম, ফলনও হয় ভালো। বিষমুক্ত সবজির চাহিদা ও লাভ বেশি হওয়ায় এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার কৃষকরা। এবিষয়ে কৃষকদেরকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বারো মাস পানি জমে থাকায় বিভিন্ন বিলকে চাষের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে কৃষি বিভাগ। বিলের কচুরিপানা পচিয়ে ভাসমান বেড তৈরি করে রোপণ করা হয় বীজ।

লাউ, ঝিঙা, বেগুন, ঢেঁড়শ, মরিচসহ বিভিন্ন শাক-সবজি পানির উপর চাষ করা হয় এই ভাসমান পদ্ধতিতে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়া জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করায় বাড়তি খরচও নেই এই পদ্ধতিতে। ফলে কম খরচে বেশি ফসল পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।

উপজেলার আন্দ্রাইল বিল, কেইল্যা বিল, দুবধল বিল, কুড়ের পাড় বিলে দেখা যায় পানির মাঝখানে সবজির বাগান। বিশেষ পদ্ধতি তৈরি করা হয় বেডগুলো। এই সবজিগুলো বিষমুক্ত হওয়ায় খেতে সুস্বাদু।

বড়হিত ইউনিয়নের কৃষক উসমান গনি জানান, বিলগুলোতে বারো মাস পানি থাকে। মাছও তেমন থাকে না। ফলে এমনিতে পড়ে থাকে বিল। পরে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেয় বিলের পানিতে সবজি চাষ করার জন্য। তারপর আমরা সবজি চাষ শুরু করি। চাষ করার পর থেকে ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে।

আরেক বলেন, বিলের কচুরিপানা পচিয়ে কিছু মাটি দিয়ে বেড তৈরি করি। সেখানে বীজ রোপণ করি। অল্প পরিচর্যায় গাছগুলো বড় হয় এবং ফল দেওয়া শুরু করে। ভাসমান বেডে এখন লাউ, ঝিঙা, ধুন্দুল, মরিচ, বেগুন, ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করা হয়েছে।

কৃষক মাহাতাব উদ্দিন বলেন, এই ভাসমান সবজি চাষ করতে কোনো কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। অল্প খরচে বেশি ফসল পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা হয়েছে। সবজিগুলো বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও বেশি।

লাভ বেশি হওয়ায় এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে অন্য কৃষকদের। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে উৎপাদন আরো বাড়বে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপা রানী চৌহান বলেন, দিন দিন কৃষি জমির পরিমাণ কমছে। পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদেরকে পরামর্শের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি ও সার বীজ। এতে উপজেলায় সবজি উৎপাদন বেড়েছে। এ বছর ঈশ্বরগঞ্জে ৫ একর জায়গায় বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হচ্ছে ভাসমান পদ্ধতিতে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

খরচ কম, ফলন বেশি, বাড়ছে ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ

আপডেট: ০৯:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভাসমান বেডে সবজি চাষ। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে খরচ কম, ফলনও হয় ভালো। বিষমুক্ত সবজির চাহিদা ও লাভ বেশি হওয়ায় এ পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার কৃষকরা। এবিষয়ে কৃষকদেরকে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বারো মাস পানি জমে থাকায় বিভিন্ন বিলকে চাষের আওতায় আনতে কাজ শুরু করে কৃষি বিভাগ। বিলের কচুরিপানা পচিয়ে ভাসমান বেড তৈরি করে রোপণ করা হয় বীজ।

লাউ, ঝিঙা, বেগুন, ঢেঁড়শ, মরিচসহ বিভিন্ন শাক-সবজি পানির উপর চাষ করা হয় এই ভাসমান পদ্ধতিতে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়া জৈব পদ্ধতিতে সবজি চাষ করায় বাড়তি খরচও নেই এই পদ্ধতিতে। ফলে কম খরচে বেশি ফসল পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।

উপজেলার আন্দ্রাইল বিল, কেইল্যা বিল, দুবধল বিল, কুড়ের পাড় বিলে দেখা যায় পানির মাঝখানে সবজির বাগান। বিশেষ পদ্ধতি তৈরি করা হয় বেডগুলো। এই সবজিগুলো বিষমুক্ত হওয়ায় খেতে সুস্বাদু।

বড়হিত ইউনিয়নের কৃষক উসমান গনি জানান, বিলগুলোতে বারো মাস পানি থাকে। মাছও তেমন থাকে না। ফলে এমনিতে পড়ে থাকে বিল। পরে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেয় বিলের পানিতে সবজি চাষ করার জন্য। তারপর আমরা সবজি চাষ শুরু করি। চাষ করার পর থেকে ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে।

আরেক বলেন, বিলের কচুরিপানা পচিয়ে কিছু মাটি দিয়ে বেড তৈরি করি। সেখানে বীজ রোপণ করি। অল্প পরিচর্যায় গাছগুলো বড় হয় এবং ফল দেওয়া শুরু করে। ভাসমান বেডে এখন লাউ, ঝিঙা, ধুন্দুল, মরিচ, বেগুন, ঢেঁড়শসহ বিভিন্ন শাকসবজি আবাদ করা হয়েছে।

কৃষক মাহাতাব উদ্দিন বলেন, এই ভাসমান সবজি চাষ করতে কোনো কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। অল্প খরচে বেশি ফসল পাওয়া যায়। এখান থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা হয়েছে। সবজিগুলো বিষমুক্ত হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও বেশি।

লাভ বেশি হওয়ায় এই পদ্ধতিতে চাষাবাদে আগ্রহ বাড়ছে অন্য কৃষকদের। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলে উৎপাদন আরো বাড়বে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপা রানী চৌহান বলেন, দিন দিন কৃষি জমির পরিমাণ কমছে। পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদেরকে পরামর্শের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তি ও সার বীজ। এতে উপজেলায় সবজি উৎপাদন বেড়েছে। এ বছর ঈশ্বরগঞ্জে ৫ একর জায়গায় বিভিন্ন শাক-সবজি চাষ করা হচ্ছে ভাসমান পদ্ধতিতে।