ঘরের মাঠ মিরপুরে নিজের বিদায়ী টেস্ট খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তার সেই চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিজের প্রথম টেস্টে দলেও রাখা হয় সাকিবকে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তার দেশে আসা হচ্ছে না। ইতোমধ্যে তার পরিবর্তে স্পিনার হাসান মুরাদকে দলে নিয়েছে বিসিবি।
সাকিবের দেশে না আসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আজ (শুক্রবার) নতুন করে হাসান মুরাদকে টেস্ট স্কোয়াডে নেওয়া হয়েছে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
এর আগেও গত বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে প্রথমবার ডাক পেয়েছিলেন ২৩ বছর বয়সী এই স্পিনার। যদিও সেবার তার জাতীয় দলে অভিষেক হয়নি। তবে তার আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে হাংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে। সেখানে দুটি ম্যাচও খেলেছেন মুরাদ।
তরুণ এই ডানহাতি স্পিনারের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার বেশ সমৃদ্ধ। ৩০ ম্যাচে ১৩৬টি উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তবে এবারও তার জাতীয় দলের একাদশে সুযোগ পাওয়া কঠিনই হবে। কারণ স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে আছেন অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।
এর আগে গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) দেশের মাটিতে শেষ টেস্ট খেলার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাইয়ে এসেছিলেন সাকিব। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে সেখান থেকে তার রওনা দেয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের উদ্দেশে। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনায় শেষ মুহূর্তে তাকে ফ্লাইট বাতিল করার পরামর্শ দিয়েছে বিসিবি। সাকিবকে দেশে ফিরতে নিরুৎসাহিত করার কারণ নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘আমি নিজেও চেয়েছি, সাকিব আল হাসানের মতো একজন ক্রিকেটার দেশের মাটিতে অবসর নিক। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, প্রথম দিকেই বলেছি সাকিব আল হাসানের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টতার কারণে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে; যা স্বাভাবিক। রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করাসহ জনমনের ক্ষোভ নিরসনে তিনি ফেসবুক পোস্ট দিলেও, সাম্প্রতিক প্রতিবাদে প্রতীয়মান হয়েছে যে তা যথেষ্ট ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রতিবাদ করছে তাদেরও তা করার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। সাউথ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের মধ্যকার সিরিজে কোনোপ্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেই আপাতত দেশে খেলতে আসার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে বিসিবিকে পরামর্শ দিতে হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার আশু ব্যবস্থা হিসেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তবে সকলেরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত বলে মনে করি। কোনো অভিযোগ থাকলে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নিয়েই তার সমাধান খোঁজা যেতে পারে।’ মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের স্কোয়াড
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস, জাকের আলী অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, হাসান মুরাদ।