এখন লক্ষ্য প্রতিটি ভূমি অফিস দুর্নীতিমুক্ত করা: মন্ত্রী

  • আপডেট: ১০:৫২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুন ২০২৪
  • 23

ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট অনেকেই দুর্নীতি করেন। এসিল্যান্ড ভালো থাকলেও তার অফিসে অনেকেই নানাভাবে অসৎ কাজ করে যাচ্ছেন। এখন সবকিছু দুর্নীতিমুক্ত করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার (২২ জুন) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের আয়োজনে বিভাগীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় জনবান্ধব ডিজিটাল জরিপ বিষয়ক কর্মশালা ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ভূমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে জনবল কম আছে, তা দ্রুত বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। জমিজমার বিষয়ে সচেতনতার অভাবে ত্রুটি হচ্ছে। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি অফিস দুর্নীতিমুক্ত করা এখন লক্ষ্য। দুর্নীতি যেই করুক এখন ধরা পড়ে যায়। কারণ ভোটার আইডি কার্ডে সবার জমিসহ সব কার্যক্রম রেকর্ড হয়। ফলে দুর্নীতি করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আমরা পদ্ধতিগত (সিস্টেম) পরিবর্তনের মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। এই উদ্যোগ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনার স্মার্ট ডিজিটাইজেশন বৈধ মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। এটি অবৈধ দখল রোধ করার পাশাপাশি অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে ভূমি ক্রয়ের প্রচেষ্টাও প্রতিহত করবে।

প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রসঙ্গ টেনে ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবস্থাকে ভূমি মালিকানা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছি। এই উদ্যোগ সফল হলে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, সচেতন নাগরিকই স্মার্ট নাগরিক। স্মার্ট নাগরিকরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকেন। নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে দুর্নীতি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. আহসান হাবীব, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মোমিনুর রশীদ, বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, বরিশালের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মৃধা মো. মোজাহিদুল ইসলাম, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসসহ চার্জ অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ভূমি প্রশাসনের অন্যান্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে উন্মুক্ত আলোচনাসহ অতিথিরা জনবান্ধব ডিজিটাল জরিপ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ চট্টগ্রাম, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা এবং ধামরাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ইডিএলএমএস (এস্টাব্লিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তায় জিএনএসএস, টোটাল সার্ভে সিস্টেম, ড্রোন, ওরাকল ডাটা ও জিআইএস সফটওয়্যারসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের আরও ৩২টি উপজেলায় বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে) অপারেশন শিগগিরই শুরু করা হবে।

Tag :

এখন লক্ষ্য প্রতিটি ভূমি অফিস দুর্নীতিমুক্ত করা: মন্ত্রী

আপডেট: ১০:৫২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ জুন ২০২৪

ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, ভূমি অফিসে সংশ্লিষ্ট অনেকেই দুর্নীতি করেন। এসিল্যান্ড ভালো থাকলেও তার অফিসে অনেকেই নানাভাবে অসৎ কাজ করে যাচ্ছেন। এখন সবকিছু দুর্নীতিমুক্ত করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার (২২ জুন) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের আয়োজনে বিভাগীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় জনবান্ধব ডিজিটাল জরিপ বিষয়ক কর্মশালা ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট ভূমি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ভূমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে জনবল কম আছে, তা দ্রুত বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। জমিজমার বিষয়ে সচেতনতার অভাবে ত্রুটি হচ্ছে। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিটি অফিস দুর্নীতিমুক্ত করা এখন লক্ষ্য। দুর্নীতি যেই করুক এখন ধরা পড়ে যায়। কারণ ভোটার আইডি কার্ডে সবার জমিসহ সব কার্যক্রম রেকর্ড হয়। ফলে দুর্নীতি করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আমরা পদ্ধতিগত (সিস্টেম) পরিবর্তনের মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূলের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। এই উদ্যোগ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনার স্মার্ট ডিজিটাইজেশন বৈধ মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে। এটি অবৈধ দখল রোধ করার পাশাপাশি অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে ভূমি ক্রয়ের প্রচেষ্টাও প্রতিহত করবে।

প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রসঙ্গ টেনে ভূমিমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবস্থাকে ভূমি মালিকানা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করেছি। এই উদ্যোগ সফল হলে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

ভূমি মন্ত্রণালয় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, সচেতন নাগরিকই স্মার্ট নাগরিক। স্মার্ট নাগরিকরা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন থাকেন। নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে দুর্নীতি অনেকাংশেই হ্রাস পাবে।

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদ, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দীন আহমেদ।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. আহসান হাবীব, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মোমিনুর রশীদ, বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, বরিশালের জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার মৃধা মো. মোজাহিদুল ইসলাম, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুসসহ চার্জ অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), ভূমি প্রশাসনের অন্যান্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে উন্মুক্ত আলোচনাসহ অতিথিরা জনবান্ধব ডিজিটাল জরিপ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ চট্টগ্রাম, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা এবং ধামরাই ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ইডিএলএমএস (এস্টাব্লিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তায় জিএনএসএস, টোটাল সার্ভে সিস্টেম, ড্রোন, ওরাকল ডাটা ও জিআইএস সফটওয়্যারসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর পাশাপাশি আরও একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের আরও ৩২টি উপজেলায় বিডিএস (বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে) অপারেশন শিগগিরই শুরু করা হবে।