কোরিয়া বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠেছে: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট: ০৫:১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪
  • 27

ছবি- সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোরিয়া বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার (জুন ২৭) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তার সংসদ ভবন কার্যালয়ে কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ুন হি-সাং এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সরওয়ার-ই-আলম সরকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

উন্নয়ন সহায়তার জন্য কোরিয়ান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৫ বছরে বাংলাদেশে কোরিয়ান সহায়তা ৩০০-৪০০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট পয়েন্টে রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণে অর্থায়নের চুক্তিতে সই করায় কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইয়ুন হি-সাং কে ধন্যবাদ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিশ্চিতভাবে সেতুটি চট্টগ্রাম শহরের যানজট সমস্যার সমাধান করবে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য মাতারবাড়ি (সোনাদিয়া) গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে একটি প্রশস্ত করিডোর তৈরি করবে।

এছাড়া বাংলাদেশে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্যও তাদের ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাক্ষাতকালে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে দুই বার সফরের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালে সফরের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গভীরভাবে সম্পৃক্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্রকে ‘বিশেষ বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী ইয়ুন হি-সাং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত এবং তার ঢাকার সফর ফলপ্রসূ হয়েছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সফরকালে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন তাকে অভিভূত করেছে বলে উল্লেখ করেন হি-সাং।

করোনা মহামারী এবং চলমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জিডিপি, চলমান উন্নয়নের গতিপথ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি। দারিদ্র বিমোচন এবং বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন ইয়ুন হি-সাং।

কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশে কোরিয়ান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে তার অঙ্গীকার পূর্নব্যক্ত করেন।

ইডিসিএফ (ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড) এবং ইডিপিএফ (ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফান্ড) এর অধীনে ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচিতে অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন কোরিয়ান প্রতিনিধি দল।

তারা বাংলাদেশে মানবসম্পদ উন্নয়নে অর্থায়ন ও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

কোরিয়ায় ক্রমবর্ধমান বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক তরুণ জনশক্তি থাকার কথা উল্লেখ করে ইয়ুন হি-সাং এ ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সুবিধার কথা উল্লেখ করেন।

এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে দুই দেশ একে অপরের পরিপূরক হতে পারে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি প্রকৃত পক্ষে দুই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে।

কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের সঙ্গে আরও উন্নয়ন ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কোরিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও বিস্তৃত এবং গভীর করার বিষয়ে তার অঙ্গীকারের কথা পূর্নব্যক্ত করেন।

সৌজন্য সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।

Tag :

কোরিয়া বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠেছে: প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ০৫:১১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোরিয়া বাংলাদেশের অসাধারণ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ অংশীদার হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার (জুন ২৭) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী তার সংসদ ভবন কার্যালয়ে কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ুন হি-সাং এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সরওয়ার-ই-আলম সরকার সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

উন্নয়ন সহায়তার জন্য কোরিয়ান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৫ বছরে বাংলাদেশে কোরিয়ান সহায়তা ৩০০-৪০০ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট পয়েন্টে রেল ও সড়ক সেতু নির্মাণে অর্থায়নের চুক্তিতে সই করায় কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইয়ুন হি-সাং কে ধন্যবাদ দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিশ্চিতভাবে সেতুটি চট্টগ্রাম শহরের যানজট সমস্যার সমাধান করবে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য মাতারবাড়ি (সোনাদিয়া) গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে একটি প্রশস্ত করিডোর তৈরি করবে।

এছাড়া বাংলাদেশে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্যও তাদের ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সাক্ষাতকালে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রে দুই বার সফরের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১০ সালে সফরের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গভীরভাবে সম্পৃক্ত কোরিয়া প্রজাতন্ত্রকে ‘বিশেষ বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।

কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী ইয়ুন হি-সাং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত এবং তার ঢাকার সফর ফলপ্রসূ হয়েছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন। সফরকালে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন তাকে অভিভূত করেছে বলে উল্লেখ করেন হি-সাং।

করোনা মহামারী এবং চলমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জিডিপি, চলমান উন্নয়নের গতিপথ এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি। দারিদ্র বিমোচন এবং বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন ইয়ুন হি-সাং।

কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশে কোরিয়ান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে তার অঙ্গীকার পূর্নব্যক্ত করেন।

ইডিসিএফ (ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড) এবং ইডিপিএফ (ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফান্ড) এর অধীনে ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচিতে অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশকে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন কোরিয়ান প্রতিনিধি দল।

তারা বাংলাদেশে মানবসম্পদ উন্নয়নে অর্থায়ন ও সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

কোরিয়ায় ক্রমবর্ধমান বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ এবং বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক তরুণ জনশক্তি থাকার কথা উল্লেখ করে ইয়ুন হি-সাং এ ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সুবিধার কথা উল্লেখ করেন।

এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠতে দুই দেশ একে অপরের পরিপূরক হতে পারে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এটি প্রকৃত পক্ষে দুই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করে।

কোরিয়া এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান বাংলাদেশের সঙ্গে আরও উন্নয়ন ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কোরিয়ার সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও বিস্তৃত এবং গভীর করার বিষয়ে তার অঙ্গীকারের কথা পূর্নব্যক্ত করেন।

সৌজন্য সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী।