কোটা নিয়ে মামলার আপিলে আন্দোলনকারীরা পক্ষভুক্ত হওয়ার আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আপিল বিভাগ একটা ন্যায়বিচার করবেন, এটাই আমাদের আশা। আমার মনে হয় সেটাই হবে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
কোটা আন্দোলন নিয়ে সরকারের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের অবস্থানের বিষয়ে আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত স্পষ্ট করেই বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার নেই এখন, কোটার ইস্যুটা এখন সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আছে। সর্বোচ্চ আদালত সেখানে সিদ্ধান্ত নেবেন, তারা সব পক্ষকে শুনে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন।
আন্দোলনকারীরা রাস্তাঘাট অবরোধ করায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। গতকাল কয়েকজন মন্ত্রী মিলে বৈঠক করেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমি তো এখন শুনলাম যে তারা (কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী) আপিল বিভাগের মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছেন। পক্ষভুক্ত হওয়ার দরখাস্ত… আমি যতটা শুনেছি আগামীকাল বোধহয় তার শুনানি হবে। সেক্ষেত্রে আমি তো মনে করছি তারা সঠিক পথে হাঁটছেন। এ অর্থে যে, আমি যতদূর জেনেছি যখন হাইকোর্ট বিভাগে মামলা চলে আজ যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন তারা কিন্তু তাদের বক্তব্য আদালতের কাছে পেশ করার জন্য বা আদালতে উপস্থাপন করার জন্য কোনো আইনজীবী নিয়োগ করেননি। তাদের বক্তব্য সেখানে দেননি। তারপর মামলাটার রায় হয়ে গেছে। মামলাটা এখন আপিল বিভাগে। গতকাল পর্যন্ত তাদের কোনো আইনজীবী ছিল না তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করার জন্য।’
‘ঘটনা ঘটছে আদালতে। যদি সেখানে রাজপথে আন্দোলন করে, এটার কিন্তু নিরসন হবে না। এটা করলে যেটা হয় একপর্যায়ে হয়তো আদালত অবমাননাও হয়ে যেতে পারে।
আনিসুল হক বলেন, ‘সেক্ষেত্রে সঠিক জায়গা কোনটা? আমি গতকাল বলেছি, সঠিক জায়গা হচ্ছে তারা যদি পক্ষভুক্ত হয়ে তাদের বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করেন, তবে আপিল বিভাগ সব পক্ষের কথা শুনবেন এবং সব পক্ষের বক্তব্য শুনে আপিল বিভাগ একটা ন্যায়বিচার করবেন, এটাই আমাদের আশা এবং আমার মনে হয় সেটাই হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আজ দেখছি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ তারা নিয়েছেন। আমি এটাকে সাধুবাদ জানাই। এখন তারা তাদের বক্তব্য আদালতে দেবেন। আশা করবো যেহেতু তারা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন।
সরকারের কেউ কেউ বলেছেন কোটাবিরোধী আন্দোলন অযৌক্তিক। সেক্ষেত্রে আদালত প্রভাবিত হতে পারে কি না- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এ মামলায় কী হতে পারে সে বিষয়ে আমি কিন্তু কিছু বলবো না। কারণ হচ্ছে এটা সাব-জুডিস (বিচারাধীন)। বাইরে থেকে একজন আইনমন্ত্রী হিসেবে বা আইনের দিক থেকে যতটুকু বলার দরকার আমি কিন্তু সেটা গতকালও বলেছি, আজও বললাম।’
‘আদালতের ব্যাপার আদালতে কথা বলতে হবে, রাস্তায় কথা বললে হবে না। আজ দেখছি যে, তারা (আন্দোলনকারীরা) আদালতে যাওয়ার জন্য একটা পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমার বক্তব্য এখানেই শেষ। বাকিটা আদালত দেখবেন’, যোগ করেন আইনমন্ত্রী।