অস্বস্তিতে ভারত, ড. ইউনূসের ‘মেগাফোন কূটনীতিতে

  • আপডেট: ০৬:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 26

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। এর ফলে এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের মধ্যে সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এক সাক্ষাৎকারে আশ্চর্য হয়েছে ভারত। কারণ ওই সাক্ষাতকারে ড. ইউনূস ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে রয়েছে তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সম্পাদক আনবারাসান ইথিরাজান।

শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবে দেখা হয়। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারত ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভালো সময় পার করেছে। এছাড়া নিরাপত্তার দিক দিয়েও ভারত সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা ভারত বিরোধী গোষ্ঠীকে কঠোর হাতে দমন করেন এবং সীমান্তের অমিমাংসীত কিছু বিষয় নিষ্পত্তি করেন।

তবে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তিনি কতদিন থাকবেন সে সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানায়নি ভারত। এ অবস্থা ভারত ও বাংলাদেশের গভীর সম্পর্কের মধ্যে এক জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। যা প্রকাশ পেয়েছে ড. ইউনূসের বার্তায়।

গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ভারতের কাছে আমাদের আবেদন দিল্লিতে অবস্থান করা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করা। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায় তাহলে তার চুপ থাকা উচিত।

জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে ভারতকে চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশ।

ওই সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এক সঙ্গে কাজ করা উচিত। যদিও এ সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে রয়েছে।

যদিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূসের এমন মন্তব্যে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তারা খুবই হতাশ হয়েছেন।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে ভারতের সরকারি এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর ভারত নজর রাখছে এবং পরিস্থিতি উন্নতির জন্য অপেক্ষা করছে। এছাড়া ভারতকে নিয়ে যেসব মন্তব্য করা হচ্ছে তা নয়াদিল্লি নথিভূক্ত করছে।

ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ড. ইউনূস মেগাফোন কূটনীতির মাধ্যমে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করছেন এবং তিনি অমীমাংসিত বিষয়গুলো মিডিয়াতে সামনে আনার চেষ্টা করছেন।

ঢাকা নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ভারতের নির্দেশনা রয়েছে। সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, কীসের ভিত্তিতে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

Tag :

স্বামী ঝুলছিলেন ফ্যানে, স্ত্রী সহ দুই সন্তানের রক্তাক্ত লাশ পরে ছিলো বিছানায়

অস্বস্তিতে ভারত, ড. ইউনূসের ‘মেগাফোন কূটনীতিতে

আপডেট: ০৬:১৩:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যান। এর ফলে এক মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের মধ্যে সম্পর্কে কিছুটা ভাটা পড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এক সাক্ষাৎকারে আশ্চর্য হয়েছে ভারত। কারণ ওই সাক্ষাতকারে ড. ইউনূস ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক কোন পর্যায়ে রয়েছে তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সম্পাদক আনবারাসান ইথিরাজান।

শেখ হাসিনাকে ভারতপন্থী হিসেবে দেখা হয়। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন ভারত ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পর্কের দিক দিয়ে সবচেয়ে ভালো সময় পার করেছে। এছাড়া নিরাপত্তার দিক দিয়েও ভারত সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা ভারত বিরোধী গোষ্ঠীকে কঠোর হাতে দমন করেন এবং সীমান্তের অমিমাংসীত কিছু বিষয় নিষ্পত্তি করেন।

তবে শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে তিনি কতদিন থাকবেন সে সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানায়নি ভারত। এ অবস্থা ভারত ও বাংলাদেশের গভীর সম্পর্কের মধ্যে এক জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। যা প্রকাশ পেয়েছে ড. ইউনূসের বার্তায়।

গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ভারতের কাছে আমাদের আবেদন দিল্লিতে অবস্থান করা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বিবৃতি দেওয়া বন্ধ করা। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা পর্যন্ত ভারত যদি তাকে রাখতে চায় তাহলে তার চুপ থাকা উচিত।

জুলাই ও আগস্টে সরকারবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে ভারতকে চাপ দিচ্ছে বাংলাদেশ।

ওই সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এক সঙ্গে কাজ করা উচিত। যদিও এ সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে রয়েছে।

যদিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূসের এমন মন্তব্যে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তারা খুবই হতাশ হয়েছেন।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্তে ভারতের সরকারি এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর ভারত নজর রাখছে এবং পরিস্থিতি উন্নতির জন্য অপেক্ষা করছে। এছাড়া ভারতকে নিয়ে যেসব মন্তব্য করা হচ্ছে তা নয়াদিল্লি নথিভূক্ত করছে।

ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ড. ইউনূস মেগাফোন কূটনীতির মাধ্যমে ভারতকে চাপে রাখার চেষ্টা করছেন এবং তিনি অমীমাংসিত বিষয়গুলো মিডিয়াতে সামনে আনার চেষ্টা করছেন।

ঢাকা নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ভারতের নির্দেশনা রয়েছে। সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, কীসের ভিত্তিতে ড. ইউনূস ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে তা স্পষ্ট নয়।